সপ্তাহে চার দিন কিসমিস ভেজানো পানি খেলে কি হয়? কতটুকু কিসমিস দিয়ে কিসমিস পানি তৈরি করতে হয় আজ আমরা সে বিষয়ে জানবো…
অনেকেই হয়তো জানেন না কিসমিস একটি স্বাস্থ্যগুণ সম্পন্ন খাবার। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, যা হার্টকে ভাল রাখে এবং খারাপ কোলেস্টরল দূর করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে আয়রন যা রক্তাল্পতা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও রয়েছে কার্বোহাইট্রেট, যা এনার্জি জোগায়। মহিলারাই বিশেষত রক্তাল্পতায় ভোগেন, তাই চিকিৎসকরা বলেন কিসমিস, মহিলাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ উপকারি।
কিসমিস ভেজানো পানিও শরীরের পক্ষে খুবই উপকারি। কিসমিসের পানি লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, কিসমিস ভেজানো পানি খেলে শরীরে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। যার ফলে রক্ত পরিশোধিত হতে শুরু করে। সপ্তাহে কমপক্ষে চারদিন এই কিসমিস ভেজানো পানি খেলে তা পেট পরিষ্কার রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। যাঁরা প্রায়শই পেটের গণ্ডগোলে ভোগেন তাঁদের জন্য এই টনিক বিশেষ উপকারি। উপরন্তু এর থেকে পাওয়া যায় ভরপুর এনার্জি, যা সারাদিন আপনাকে রাখবে প্রাণবন্ত। শুধু তাই নয়, কিসমিস ভেজানো পানি খেলে লিভারের পাশাপাশি কিডনিও খুব ভাল থাকে। আর কিডনি ও লিভার যদি ভাল থাকে তাহলে তা পরোক্ষভাবে হজমে সাহায্য করে।
এখন কথা হল কীভাবে কিসমিস ভেজাবেন?
২ কাপ পানিতে ১৫০ গ্রাম কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। অবশ্যই চেষ্টা করবেন গাঢ় রঙের কিসমিস কিনতে। হাল্কা রঙের কিসমিসে মেশানো থাকে ক্যামিক্যাল যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। কিসমিসগুলিকে ভালভাবে ধুয়ে, সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরেরদিন সকালে কিসমিস ছেকে নিয়ে সেই পানি হালকা গরম করে খালি পেটে খেয়ে নিন। এর পরে আধ ঘন্টা আর অন্য কোনও খাবার খাওয়া চলবে না। সপ্তাহে কমপক্ষে চারদিন এই পানি খেলে এক মাসের মধ্যেই তফাৎটা অনুভব করবেন।
প্রতিদিন কিসমিসের পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন ওষুধ ছাড়াই। এছাড়া কিসমিস হৃদয় ভালো রাখে। নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরল। কিসমিসে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ আছে। আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সহজে রোগমুক্তির কারণ। আর আছে প্রচুর আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার।
ভেজানো কিসমিসের উপকারিতা-
ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা থাকলেও এটি তা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
১. ব্লাড প্রেসার
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি কিসমিস। এর মধ্যে থাকা পটাসিয়াম হাই ব্লাড প্রেসার বশে রাখে।
২. রক্ত স্বল্পতা কমায়
নিয়মিত কিসমিস ভেজানো পানি খেলে, এর মধ্যে থাকা আয়রন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। এছাড়াও এর মধ্যে আছে তামা যা রক্তে লাল রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
৩. হজমশক্তি বাড়ায়
সুস্থ থাকার জন্য ভালো হজমশক্তি জরুরি। এক্ষেত্রে কিসমিস হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। রোজ রাতে এক গ্লাস পানিতে কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরে সেই কিসমিস পানি খান। পনেরো দিন পরে নিজেই নিজের তফাত খেয়াল করুন ।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আপনি যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়াতে চান তবে ভেজা কিসমিস এবং তার পানি নিয়মিত খান। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৫. বিষমুক্ত শরীর
শরীরকে দূষণমুক্ত করতে কিসমিস খান নিয়মিত। চারিদিকের দূষণে আপনি যখন দূষিত তখন সকালে খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেলে শরীর বিষমুক্ত হবে। ভেজানো কিসমিসের পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো পানিও খেতে পারেন।
৬. কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
নিয়মিত কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। আপনি যদি পেটের সমস্যায় নিয়মিত ভোগেন তাহলে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ভেজানো কিসমিস খান। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পান তারা ওষুধের বদলে নিয়মিত কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন।
তাই নিয়ম করে সপ্তাহে ৪দিন কিসমিস ভেজানো পানি খান আর সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্ হাফেজ।