NE

News Elementor

What's Hot

গলা ব্যথার বিভিন্ন উপসর্গ ও করণীয়

Table of Content

গলায় ব্যথা সাধারণ একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা অন্য কোন জটিল অসুখের পূর্ব লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ঠাণ্ডা লাগা, ঋতু পরিবর্তন, বহুক্ষণ কথা বলা ইত্যাদি কারণে যে কারও গলা ব্যাথা হতে পারে। আসুন সমস্যাটির বিভিন্ন লক্ষণ, উপসর্গ ও করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।

গলা ব্যথা কি?

গলা ব্যথা যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ফ্যারিঞ্জাইটিস (Pharyngitis)। প্রধানত ঠান্ডা ও ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা) এর জীবাণুর সংক্রমণে গলায় এ ধরণের সমস্যা হতে দেখা যায়। অনেক সময় গলা ব্যথার জন্য গলায় শুষ্ক চুলকানি হওয়া সহ  ঢোক গিলতে, কিংবা খাবার গিলতেও সমস্যা হয়ে থাকে।

সাধারনত কি কারনে গলা ব্যথা হয়?

গলা ব্যথার জন্য অনেকগুলো কারণ দায়ী যার মধ্যে ভাইরাসজনিত অসু্‌স্থ্যতা যেমন ঠান্ডা, ফ্লু, মনোনিউক্লিওসিস (Mononucleosis) অন্যতম। অন্যান্য ভাইরাসজনিত অসু্স্থ্যতা যেমন- হাম, চিকেনপক্স এর সংক্রমনেও গলা ব্যাথা হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ  যেমন টনসিলের সমস্যা ও ডিপথেরিয়ার কারণেও গলা ব্যাথা হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য কারনের মধ্যে এলার্জি জনিত সমস্যা, শুষ্ক আবহাওয়া, বিশেষ করে কোন কারণে শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা বেশি গরম হয়ে যাওয়া, ধূমপান করা, অধিক মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, গলার মাংসপেশীতে চাপ লাগা, এইচআইভি’র সংক্রমণ, ও মদপানের কারণে গলায় টিউমার হওয়া ইত্যাদি।

গলা ব্যথা হলে প্রধানত যে লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ দেখা দেয় সে সম্পর্কে একটু জেনে নেইঃ

  • গলায় খসখসে ভাব, চুলকানো এমনকি গলা ফুলেও যেতে পারে।
  • শ্বাস নেয়া, ঢোক গিলা কিংবা কথা বলার সময় গলায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • ঠান্ডার জন্য গলা ব্যথা হলে এর সাথে শরীরে ব্যথা সহ সর্দি, কাশি, হাঁচি ও জ্বর হতে পারে।

গলা ব্যথা যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে টনসিল ফুলে যাওয়া সহ আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে এবং সেই উপসর্গগুলো দেখা দেয়া মাত্রই ডাক্তরের কাছে গিয়ে সুচিকিৎসা নিতে হবে।

  • ঢোক গিলতে বা খাবার খেতে অসুবিধা হওয়া।
  • বার বার গলা ব্যথা হওয়া।
  • বমি হওয়া।
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া।
  • অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করা।
  • গলা ব্যথা মরাত্মক আকার ধারণ করা।
  • গলার টনসিল ফুলে লালচে হয়ে যাওয়া।
  • ৬ মাসের নীচে বয়সী শিশুদের জ্বর ১০১ ফারেনহাইট এবং বড়দের ক্ষেত্রে তা ১০৩ ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে যাওয়া।
  • অনেক সময় গলায় বা টনসিলে পুঁজও হতে পারে।

গলায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা যে কারোরেই হতে পারে, তারপরও কারো কারো গলায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।

  • শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা যারা ধুলা বালির সংস্পর্শে বেশি আসে।
  • যারা ধূমপান কারী ব্যক্তি বা পরোক্ষ ভাবে যারা এর সংস্পর্শে আসে যেমন যারা ধূমপায়ী ব্যক্তির খুব কাছাকাছি থাকে।
  • যাদের ধূলা-বালি থেকে এলার্জির সমস্যা হয়।
  • যারা ঘরে ব্যবহার করা জ্বালানী ও রাসায়নিক বস্তুর সংস্পর্শে আসে।
  • যাদের দীর্ঘ সময় ধরে সাইনাসের সমস্যা রয়েছে।
  • যারা একসাথে গাদাগাদিভাবে থাকে যেমন-শ্রেণীকক্ষ, অফিস ইত্যাদিতে। এখানে একজনের সমস্যা হলে দ্রুত তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
  • এছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদেরও এই সমস্যা বেশি হয়।
  • যেসব জীবন-যাপন পদ্ধতির মাধ্যমে গলা ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব

এই গরমে নবজাতক শিশুর যত্ন নিবেন কিভাবে?

 

কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলার মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা এই গলা ব্যাথার সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারি। যেমন-

  • যতবার সম্ভব সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
  • অন্যের ব্যাবহার করা খাবার ও জিনিসপত্র যেমন গ্লাস, প্লেট,গামছা কিংবা তোয়ালে শেয়ার করা বাদ দিতে হবে।
  • অন্যের ব্যবহৃত টেলিফোন বা মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • একই পানির জগ বা গ্লাস মুখ দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • নিয়মিত টেলিফোন, টিভির রিমোট ও কম্পিউটার কী-বোর্ড পরিষ্কার করতে হবে।
  • অসুস্থ ব্যক্তি থেকে যতটুকু সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
  • বাড়ির আবহাওয়া শুষ্ক থাকলে তা আদ্র রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই পরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করা সহ নিয়মিত তা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • ধূমপান করা কিংবা ধূমপায়ী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • প্রচুর তরল জাতীয় খাবার যেমন- গরম চা, পানি ও ফলের রস খেতে হবে।
  • ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা হলে এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিলিয়ে তা দিয়ে গড়গড়া করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
  • ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা এক গ্লাস খুব গরম পানিতে মধু এবং লেবু মিশিয়ে তা ঠান্ডা করে তারপর পান করা যেতে পারে।
  • যতটুকু সম্ভব কথা কম বলার চেষ্টা করতে হবে।
  • সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে বাড়িতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

গলা ব্যথার চিকিৎসা

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গলা ব্যথা সাধারণত এক সপ্তাহ অথবা কিছুদিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে যদি এর প্রকোপ বেশী হয় তাহলে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেমন গলা পরীক্ষা ও অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। রোগের ধরণ জেনে ডাক্তারের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। এছাড়া  পর্যাপ্ত তরল খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত ও বাড়তি ঘুমাতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে এ্যান্টিবায়োটিক সেবনেরও প্রয়োজন হতে পারে। 

মুল কথা, গলা ব্যথা একটি স্বাভাবিক শারীরিক সমস্যা। এই সমস্যায় কমবেশি সবাই ভুগে থাকেন। বিভিন্ন সময়ে ও নানা কারণে আমাদের গলায় ব্যথা হতে পারে। তাই সাবধানে থাকা সহ সঠিকভাবে জীবন যাপন করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করা উচিত।

zulfekul234@gmail.com https://www.healthpathsala.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent News

Trending News

Editor's Picks

কালিজিরা খাওয়ার উপকারিতা

কালোজিরার স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিরাময় থেকে শুরু করে শরীরের কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কালোজিরা। কালোজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আছে কালোজিরার তেল। মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের মহা ঔষধ বলা হয় কালোজিরাকে। কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সবাই জানি। কিন্তু কোন রোগের জন্য কালোজিরা কিভাবে খেতে হবে তা জানিনা । তাই আজকে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও...

টেস্টেস্টেরন হরমোন বাড়ানোর আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা

আজকে আমরা কথা বলবো, টেস্টেস্টেরন হরমোন বাড়ানোর আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার বিষয় গুলো নিয়ে। এই বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা উচিত। কারন, শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন হলো টেস্টোস্টেরন। কয়েকটি বিষয় মাথাই রাখলেই এ হরমোনের মাত্রা বাড়ানো সম্ভব। আজ তেমনি কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি… পর্যাপ্ত ঘুম ঘুমের অভাবে দেহে হরমোন ও অন্যান্য উপাদানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। ফলে...

সামাজিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আমরা বাংলার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের স্বাস্থ্য পরামর্শ পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে সচেতন করতে চাই। বিশেষ করে বাংলার গ্রামীন সমাজের সহজ সরল মানুষদের কাছে।

Popular Categories

Must Read

©2024- All Right Reserved By Health Pathsala