এমন কেউ-ই হয়ত নেই যে ভ্যাসলিন সম্পর্কে জানে না বা ব্যবহার করেনি। বছরের পর বছর ধরে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ভ্যাসলিন। তবে এর গতানুগতিক ব্যবহারের বাইরেও এর আরও যেসব ব্যবহার রয়েছে সে সম্পর্কে আমরা হয়ত খুব কমই জানি। তাই ভ্যাসলিনের বিভিন্ন উপকারী দিক সম্পর্কে আপনাদের জানাতেই আজকের আলোচনা
শেভ করার পর ত্বকের আর্দ্রতা আনতে:
শেভ করার পর মুখে শুষ্ক ভাব চলে আসে। সেটা থেকে রেহাই পেতে সামান্য ভ্যাসেলিন মুখে মেখে নিন। দেখবেন মুখের টান টান ভাব আর থাকবে না।
ঠোঁট ফাটা দূর করতে ভ্যাসলিন
– ভ্যাসলিন ঠোঁটের জন্য খুব ভালো এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে। নরম ও সুন্দর ঠোঁট পেতে ঠোঁটে ভ্যাসলিন লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর একটি টুথব্রাশ দিয়ে হালকা করে ঘষুন। এরপর নরম একটি কাপড় দিয়ে ঠোঁট মুছে, ধুয়ে ফেলুন। এটি ঠোঁটের মরা কোষ দূর করে ঠোঁটকে নরম করে।
ত্বকের মরা কোষ দূর করতে:
ভ্যাসেলিনের সাথে সামান্য সামুদ্রিক লবন মিশিয়ে পুরো শরীর স্ক্রাব করে গোসল করলে দেহের ত্বক হয়ে উঠবে সতেজ ও মসৃন।
পায়ের গোড়ালী ফাটা রোধ করে:
লোশন বা ক্রিমের বদলে অনেকেই ভ্যাসেলিন ব্যবহার করে থাকেন। তবে জানেন না যে গোড়ালি ফাটা দূর করতেও ভ্যাসেলিন দারুণ কাজে আসে। পা ভালো করে ঘষে পরিস্কার করে নিয়মিত ভেসলিন মেখে মোজা পড়ে রাখলে খুব সহজেই এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
পারফিউমের গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী করতে:
– পারফিউম দেয়ার আগে হাতে বা গলায় ভ্যাসলিন লাগিয়ে সেখানে পারফিউম স্প্রে করুন। ভ্যাসলিন অনেকক্ষণ পর্যন্ত পারফিউমের সুগন্ধ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
– চোখের পাপড়ি ঘন ও লম্বা করতে ব্যবহার করতে পারেন ভ্যাসলিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের পাপড়িতে ভ্যাসলিন লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।
– হাতের আঙ্গুলে টাইট হয়ে লেগে থাকা আংটি খুলতে সেখানে ভ্যাসলিন লাগান। সহজেই খুলে যাবে আংটি।
– মেক-আপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ভ্যাসলিন। সেক্ষেত্রে একটি তুলার মধ্যে ভ্যাসলিন নিয়ে মুখে ধীরে ধীরে ঘষে মেক-আপ তুলু্ন। এরপর ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
– হাতের কনুই এর খসখসে চামড়া নরম ও মসৃণ করতে বা গোড়ালির ফাটা রোধ করতে সেখানে নিয়মিত ভ্যাসলিন লাগান।
– নখ ভাঙ্গা থেকে রক্ষা পেতে এবং নখকে শক্ত করতে ভ্যাসলিনের সাথে গ্লিসারিন মিক্স করে নখে লাগান অথবা শুধু ভ্যাসলিনও ব্যবহার করতে পারেন।
– চুলের আগা ফাটা রোধ করতে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলের আগায় একটু ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন। ধীরে ধীরে চুলের আগা ফাটা কমে যাবে।
– যাদের কানের দুল পরতে সমস্যা হয় বা কানের ছিদ্রে ব্যথা অনুভব করেন তারা দুল পরার আগে সেখানে ভ্যাসলিন মেখে নিন। তাহলে খুব সহজেই কানের দুল পরতে পারবেন এবং ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
জুতার উজ্জলতা বৃদ্ধিতে:
জরুরি কোন কাজে পরিপাটি হতে হবে কিন্তু হাতের কাছে পলিশ নেই। কোন চিন্তা নেই! সামান্য ভ্যাসেলিন নিয়ে জুতা ভাল করে কাপড় দিয়ে মুছে নিন। নতুনের মত ঝকঝকে হয়ে যাবে।
অনেক সময়ই দাঁতে লিপস্টিক লেগে যায়। তাই মেকআপের আগে সামান্য ভ্যাসেলিন দাঁতে লাগান। দাঁত দেখতে হবে সাদা এবং লিপস্টিকও আর লাগবেনা।
চুলের রঙের দাগ তুলতে:
অনেক সময় সাদা চুল কালো রঙ করতে গিয়ে কপালে, কানে এসব স্থানে লেগে যায়। সেই দাগ সহজে তোলাটাও কষ্টকর হয়ে যায়। তখন সামান্য কিছুটা ভেসলিন নিয়ে লেগে থাকা দাগের উপর লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুন। দাগ উঠে যাবে।
– ভ্যাসলিনের সাহায্যে খুব সহজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন ক্রিম ব্লাশার। পছন্দের কালারের লিপস্টিকের সাথে ভ্যাসলিন ভালো মতো মিশিয়ে একটি কৌটায় সংরক্ষণ করুন। ঠিক একই ভাবে ভ্যাসলিন এবং আই শ্যাডো মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন পছন্দের কালারের আই লাইনার।
ভ্যাসলিনের এই ব্যাবহার গুলো আপনি কি আগে জানতেন? আমাদের কমেন্ট করে জানান। ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন আল্লাহ হাফেজ।