শ্রাবণ আসন্ন। বাদলের স্যাঁতসেঁতে দিনগুলোতে চুলে একটু ভেজা ভাব থাকে। আর এই ভেজা ভাব থাকার কারনে হতে পারে চুলে খুশকি।
এইসব দিনে চুল ভিজে একাধিকবার। আবার ঘামেও ভেজা থাকে চুলের গোড়া। ভেজা চুলে হতে পারে ছত্রাকের সংক্রমণ। তাই চুল পড়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
জানা থাকলে সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে অনায়াসে ঘরেই নেওয়া যায় এইসময় চুলের যত্ন। সব ধরনের চুলের যত্নের নানা দিক নিয়ে কথা হবে আশা করি শেষ পর্যন্ত থাকবেন।
চুলের গোড়া ভিজে গেলে কি করবেন?
চুল বা চুলের গোড়া ভিজে গেলে চুলের গোড়া মুছে ফ্যানের নিচে বসুন চুল ছড়িয়ে। তড়িঘড়ি চুল শুকাতে গিয়ে আবার হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না।
এতে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বাইরে যাওয়ার সময় ব্যাগে রাখুন ছোট একটি শুকনা তোয়ালে, যা দ্রুত পানি শোষণ করতে সক্ষম। আরও রাখুন মোটা দাঁতের চিরুনি।
অফিসে বা অন্য কোথাও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে এই তোয়ালে দিয়ে চুলের গোড়া মুছে ফেলুন। এরপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন।
নিজের সুবিধা মত নিজেই তেল বানিয়ে নিতে পারেন
এজন্য আধা লিটার নারকেল তেল নিন, সঙ্গে অ্যালোভেরার ছোট টুকরা আধা কাপ।
সাথে ২ টেবিল চামচ কারিপাতা, ১ টেবিল চামচ মেথি, ১ চা-চামচ কালিজিরা ও ৬টি লবঙ্গ।
সব একসঙ্গে মৃদু আঁচে জ্বাল দিতে হবে ৩০ মিনিট। তারপর ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ছেঁকে নিন।
সারা রাত লাগিয়ে রাখলেও ক্ষতি নেই। চুল সুস্থ থাকবে। কাচের বয়াম বা বোতলে মাসখানেক সংরক্ষণ করতে পারেন এই তেল।
চুল পড়া কমাতে কয়েকটি উপকরন দিয়ে ঘরেই বানিয়ে নিতে পারেন আজব তেল
একটি পাত্রে ১ কাপ নারকেল তেল, ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল, ২ টেবিল চামচ কালিজিরা, ২ টেবিল চামচ মেথি, ২টি তেজপাতা ও ১টি ছোট পেঁয়াজ কুচি একসঙ্গে নিন।
মৃদু আঁচে জ্বাল দিন ৩০ মিনিট। ঠান্ডা হওয়ার পর ছেঁকে ব্যবহার করুন।
এই অনুপাতেই একটু বেশি পরিমাণে তৈরি করে এটিও কাচের বয়াম বা বোতলে মাসখানেকের জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
অনেকের চুলের কোমল ভাব চলে যায় এবং প্রাণবন্ততা কমে যায়। এসব সমস্যার সহজ সমাধানের জন্য এখন দুটি প্যাক এর কথা বলবো।
প্রথম প্যাকটি রুক্ষ চুলের জন্য
এক্ষেত্রে ১ কাপ টক দই, আধা কাপ অ্যালোভেরা, ১ চা-চামচ মেথিগুঁড়া, ১ চা-চামচ আমলকীগুঁড়া ও ১টি ডিম দিয়ে
একসঙ্গে ব্লেন্ড করলেই তৈরি হয়ে যাবে প্যাক।
প্যাকটি চুলে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। চুল কোমল হবে। খুশকির সমস্যা থাকলে এই প্যাক লাগানোর আগে আধা চা-চামচ লেবুর রস যোগ করতে হবে।
২য় প্যাকটি সব ধরনের চুলের জন্য
এর জন্য আমলকী, হরীতকী আর বহেরাগুঁড়ার মিশ্রণ নিন ১ চা-চামচ। মেথিগুঁড়াও নিন ১ চা-চামচ।
সঙ্গে আরও আধা কাপ টক দই, ১টি ডিম ও ১টি ছোট পেঁয়াজ কুচি। সব উপকরণ ব্লেন্ড করলেই হয়ে গেল প্যাক। চুলে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। অতিরিক্ত খুশকির সমস্যা থাকলে ব্লেন্ড করার আগে যোগ করে নিন আদাবাটা, লেবুর রস ও নারকেল তেল, প্রতিটিই ১ চা-চামচ করে।
এছাড়াও সুস্থ জীবনযাপন এর জন্য কিছু নিয়ম না মানলেই নয়। এই ধরুন…
- পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত।
- দুধ, ডিম ও আমিষজাতীয় অন্যান্য খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
- প্রতিদিন শাকসবজিও খেতে হবে।
- মোটা দাঁতের চিরুনি মাথার ত্বকের জন্য ভালো। এতে রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং চুল পড়াও কমে।
- রাতে অবশ্যই চুল বেঁধে ঘুমাতে হবে এতে চুল কম পড়ে।